রাজধানী ঢাকা, যান্ত্রিকতা ও ব্যস্ততার কারণে, শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই এক ধরনের অবহেলার শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে
ঢাকার শিশুদের জন্য খেলাধুলার সুযোগের অভাব প্রকট। ঢাকার বাইরের শিশুরা কিছুটা খেলাধুলার সুযোগ পেলেও, ঢাকার শিশুরা
অধিকাংশই গৃহবন্দি থাকে। খেলার মাঠের অভাব, নিরাপত্তার ভয়, এবং করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় তারা আরও বেশি ঘর
বন্দি হয়ে গেছে।
পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের খেলাধুলার বিকল্প হিসেবে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ট্যাব
ইত্যাদি দেন। এতে করে শিশুরা মানসিক পরিশ্রম বেশি করে, কিন্তু শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে তারা নানা রকম সমস্যার
সম্মুখীন হয়। এ ধরনের শিশুরা বাস্তব জীবনের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে না, মানুষের সাথে মেশার সুযোগ তাদের হয় না,
এবং তারা হতাশার শিকার হতে পারে।
অন্যদিকে, যেসব শিশু ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পরিবেশে যায় এবং বিভিন্ন মানুষের সাথে মেশার সুযোগ পায়, তারা জীবনের বড়
ধরনের দুঃখ-কষ্টগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে শেখে। মানসিক পরিশ্রমের পাশাপাশি শিশুর দৈহিক পরিশ্রমও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খেলাধুলা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা:

১. উপস্থিত বুদ্ধি বৃদ্ধি: খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের উপস্থিত বুদ্ধি ও তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।
২. শারীরিক বৃদ্ধি: শারীরিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখতে খেলাধুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩. পরিকল্পনা ও দূরদর্শিতা: খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের পরিকল্পনা, দূরদর্শিতা ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ জাগে। এটি তাদের
সৃজনশীলতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৪. শারীরিক কাঠামো মজবুতকরণ: ক্রিকেট, ফুটবলের মতো ছুটাছুটি করার সুযোগ রয়েছে এমন খেলার মাধ্যমে শিশুর শারীরিক
কাঠামো মজবুত হয় এবং নানা ধরনের নৈপুণ্য ও দক্ষতা আয়ত্তে আসে।
৫. পড়াশুনা ও আচরণে উন্নতি: খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুরা পড়াশুনা, আচার-আচরণ ও বুদ্ধিমত্তাতে এগিয়ে থাকে।
৬. সামাজিক সম্পর্ক ও আচরণ: সকলের সাথে মিলেমিশে খেললে শিশুদের সামাজিক আচরণ ও সম্পর্ক দৃঢ় হয়।
৭. কল্পনাশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: খেলাধুলা কল্পনাশক্তি, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ও চিন্তাশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
উপসংহার:
শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান যুগে প্রযুক্তির ব্যবহারে শিশুদের খেলাধুলার সুযোগ
কমে যাচ্ছে, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের খেলাধুলার জন্য উপযুক্ত
পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করা। শিশুদের সুস্থ ও সুষ্ঠু বিকাশের জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য।